শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার আব্দুর রাজ্জাক হাসানের বিরুদ্ধে উৎকোচ দাবী, অন্যায়ভাবে হয়রানীমূলক আচারণ,অফিস ফাঁকি সহ নানা অভিযোগ এনে অনিদিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছে জগন্নাথপুরের দলিল লেখক সমিতি।
গত সোমবার (৩ অক্টোবর) থেকে এ কর্মসুচি শুরু হয়েছে। এতে করে দলিল রেজিষ্ট্রেশন না করতে পারায় ক্রেতা – বিক্রেতাগন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মো: আব্দুর রাজ্জাক হাসান উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসির আলীকে অন্যায়ভাবে হয়রানী মূলক বহিস্কারাদেশ প্রদান করে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে দলিল সম্পাদন না করতে নির্দেশ প্রদান করেন। এঘটনার প্রেক্ষিতে দলিল লেখক সমিতি সর্বসম্মতিক্রমে কর্মবিরতি কর্মসুচি পালনের ডাক দেয়।
উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসির আলী জানান, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। গত ২৭ সেপ্টেম্বর একটি সাফ কবলা দলিল সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র দাখিল করা সত্ত্বেও সম্পাদনে অস্বীকৃতি জানান সাব রেজিষ্ট্রার । তিনি উৎকোচ দাবী করেন। আমি অস্বীকৃতি জানালে আমার সকল বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও আমার দলিল রেজিষ্ট্রেশন করেন নি।
অন্যদিকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অযথা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি বশির আহমদ জানান, সুনিদিষ্ট কোন কারণ ছাড়াই হয়রানীমূলকভাবে আমাদের সমিতির সম্পাদককে বহিস্কারাদেশ প্রদান করায় আমরা অনিদিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছি। তিনি বলেন অফিসের ভিতরে নানা অনিয়ম ও দূর্নিতী চলছে।
অফিসের সরকারী কর্মকতা- কর্মচারী গন সপ্তাহে দুই দিন অফিস করায় এলাকাবাসী চরম ভূগান্তি তে পড়েছেন। যেখানে আগে এক/ দেড় মাসের ভিতরে রেজিস্ট্রি কৃত দলিলের মূল কপি পাওয়া যেত সেখানে বর্তমানে দলিলের মূল কপি পেতে ২ থেকে ৩ বৎসর সময় লাগে। দলিল নিয়েও বানিজ্য করা হচ্ছে । দলিল প্রতি ১৫০০/ থেকে ২০০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সাজেদুল ইসলামের সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন বিষয়টি আমি দেখবো।
তিনি বলেন, সরকারী কর্মকতা- কর্মচারী যেই হউক সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সপ্তাহের ৫দিন কর্মসময়ে অফিস করতে বাধ্য। এখানে অফিস ফাঁকি গ্রহণযোগ্য নয়।
সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রাজ্জাক হাসান দীর্ঘ দিন যাবৎ নানা অনিয়ম ও ফ্রি স্টাইলে দূর্ণীতি করলেও এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। সরকারী কর্মসময় সপ্তাহে ৫ দিন হলেও তিনি জমিদারী স্টাইলে সপ্তাহে অফিস করেন দুই দিন, বাকী ৩ দিন অফিস ফাঁকি দেওয়ায় জমির ক্রেতা- বিক্রেতা গন চরম ভূগান্তিতে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিকেলে জগন্নাথপুর উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার আব্দুর রাজ্জাক হাসানের সাথে আলাপ হলে তিনি যুগান্তর কে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত উৎকোচ দাবীর বিষয়টি মিথ্যা। অশোভন আচরণের দায়ে দলিল লেখক হাসির আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি সপ্তাহে দুইদিন অফিস করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দলিল লেখকদের পরামর্শেই সপ্তাহে দুই দিন অফিস করছি।
Leave a Reply